সাংবাদিকদের ছদ্মবেশে প্রতারক চক্র! প্রেসক্লাবের তহবিল লোপাটে ব্যাংক কর্মকর্তার সহায়তা


‎নিজস্ব প্রতিবেদক :

‎চেক জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাৎ, অভিযুক্ত প্রথম আলোর প্রতিনিধি, ব্যাংক ম্যানেজারসহ ৫ জন; সাবেক সাধারণ সম্পাদকের থানায় লিখিত অভিযোগ

‎অভয়নগরে সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মাধ্যমে একটি স্বনামধন্য প্রেসক্লাবের তহবিল হাতিয়ে নেওয়ার বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে। এই ঘটনায় একদিকে যেমন জড়িত রয়েছে দেশের একটি শীর্ষ দৈনিক পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি, তেমনি আর্থিক কারসাজিতে সহায়তা করেছে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ম্যানেজারও।

‎ঘটনার সূত্রপাত অভয়নগর প্রেসক্লাবের সঞ্চয়ী হিসাব (নং 0170347546031) থেকে গোপনে ২০,০০০ টাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে। সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, এই ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ক্যাশিয়ারের যৌথ স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক। কিন্তু ২৭ মার্চ ২০২৫ তারিখে সেই প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে জাল স্বাক্ষরে টাকা তোলা হয়।

‎অভিযুক্ত

‎১. ফারুক হোসেন (৫৫)

‎২. মাসুদ আলম (৫২), যশোর জেলা প্রতিনিধি, প্রথম আলো

‎৩. চৈতন্য কুমার পাল (৫০)

‎৪. মনিরুজ্জামান মিল্টন (৪৮)

‎৫. মোঃ আশিকুর রহমান (৪৭), ম্যানেজার, আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, নওয়াপাড়া শাখা

‎অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ করে ১ থেকে ৪ নম্বর অভিযুক্ত ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজশে ব্যাংক ম্যানেজার আশিকুর রহমানের সহায়তায় একটি চেকপ্যাডে স্বাক্ষর জাল করে অর্থ উত্তোলন করেন। বিষয়টি জানার পর অভিযোগকারী কামরুল ইসলাম ব্যাংকে গিয়ে স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করে প্রতারণার প্রমাণ পান। তিনি ব্যাংক ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসা করলে ম্যানেজার সরাসরি উত্তর না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

‎জাল স্বাক্ষর, গোপন কার্যক্রম, প্রভাবশালী পরিচয়ের অপব্যবহার এবং ব্যাংক কর্মকর্তার সহায়তা—সব মিলিয়ে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগকারীর দাবি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় আপোষ-মীমাংসার চেষ্টা করেও কোনো ফল হয়নি।

‎এদিকে মোঃ মিজানুর রহমান (৩৮) মোঃ রিপানুর ইসলাম রিপন (৪৮) মোঃ আমিরুল ইসলাম (৩৮)

‎আশরাফুল ইসলাম মাসুম (৩৭)

‎তারা প্রত্যেকেই ঘটনার বিষয়ে অবগত এবং প্রয়োজনে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত বলেও জানা গেছে।

সাংবাদিকতা পেশার আড়ালে দুর্বৃত্তায়ন!

‎এই ঘটনায় অভয়নগর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পেশাদার সাংবাদিকতার আড়ালে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাংবাদিক সমাজের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অনেকেই বলছেন "এটি কেবল অর্থ আত্মসাত নয়, এটি সাংবাদিকতার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর বড় ধরনের আঘাত।

‎‎অভিযোগকারী কামরুল ইসলাম স্পষ্টভাবে বলেছেন,

‎"দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা আরও বাড়বে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

‎অভয়নগর থানার ওসি জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন। অপরাধ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ